Thu. Sep 11th, 2025

মুন্সিগঞ্জের হিজবুত তাওহীদ সম্প্রদায়ের মোল্লা হায়দার আজম সম্প্রতি যে ফতোয়া ঘোষণা করেছেন, তা কেবল ব্যক্তিগত মত নয়; এটি একটি সুপরিকল্পিত আক্রমণ আমাদের সমাজের প্রগতিশীল মূল্যবোধ, শিক্ষার অধিকার এবং নারীর স্বাধীনতার ওপর। তিনি যে নারীদের শিক্ষার বিরুদ্ধে মুরব্বি বানিয়েছেন, তা স্পষ্টভাবে দেখায়—মৌলবাদীরা এখনও আমাদের সমাজকে অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়।

মৌলবাদীরা চায় মানুষ চিন্তা না জানুক, যুক্তি ব্যবহার না করতে শিখুক, নারী শিক্ষাকে অবৈধ ও অপ্রয়োজনীয় মনে করুক। তাদের কাছে নারী শুধুই ঘরের সীমানার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা একটি “শৃঙ্খলিত” মানুষ। তারা চাইছে পুরোনো কুসংস্কার ও নির্যাতনের ইতিহাস পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে। তারা আমাদের শিশুদের স্বপ্ন চুরি করতে চায়, এবং সমাজকে তাদের আতঙ্ক ও ভয় নিয়ে পরিচালিত করতে চায়।

তবে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—যেখানে মৌলবাদ শক্তিশালী হয়েছে, সেখানে অগ্রগতি স্তব্ধ হয়েছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং আমাদের নিজের ইতিহাস দেখিয়ে দেয়, অন্ধকার তখনই বাড়ে যখন সমাজ চুপ থাকে। আর আমরা কি আবার সেই অবস্থায় ফিরে যেতে চাই? নিশ্চয়ই না। আমাদের চুপ থাকা মানে আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত, নারীর স্বাধীনতা এবং শিক্ষার অধিকারকে উৎসর্গ করা।

আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে। নারীর শিক্ষা ও স্বাধীনতার ওপর কোনো আঘাত সহ্য করা যাবে না। আমাদের কাজ হলো সচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষার মান বাড়ানো, এবং মৌলবাদী ফতোয়া ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে এক হয়ে দাঁড়ানো। এটি শুধু প্রতিবাদ নয়; এটি আমাদের সমাজকে অন্ধকারের হাত থেকে রক্ষা করার সংগ্রাম।

মৌলবাদীরা চায় আমাদের শব্দ গলা স্তব্ধ হোক। আমাদের উচিত তাদের প্রতিবাদে শব্দকে জোরালো করা। লেখার মাধ্যমে, আন্দোলনের মাধ্যমে, আমাদের সমাজের প্রতিটি মানুষকে একত্রিত করে আমরা বলতে হবে—“আমরা ফিরব না, আমরা চুপ থাকব না, আমরা অন্ধকার যুগকে মান্য করব না।”

এবার সময় এসেছে—চুপ থাকার নয়, আওয়াজ তুলতে, প্রতিবাদ করতে এবং নিশ্চিত করতে যে আমাদের সমাজে শিক্ষা, জ্ঞান ও নারী স্বাধীনতা থেকে যায় চিরকাল।