Thu. Sep 11th, 2025

মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার ফতোয়া : অন্ধকারে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র

সম্প্রতি হিজবুত তাহরির নামের উগ্রপন্থী গোষ্ঠী একটি হাস্যকর ও ভয়ংকর ফতোয়া দিয়েছে—মেয়েরা নাকি বেশি পড়াশোনা করতে পারবে না। এই ফতোয়ার মাধ্যমে তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল, তাদের উদ্দেশ্য শুধু সমাজে বিভাজন সৃষ্টি নয়, বরং নারীদের অন্ধকারে আটকে রেখে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।

ইসলামসহ বিশ্বের কোনো মহান ধর্ম নারীদের অশিক্ষিত রাখার কথা বলেনি। কুরআনের প্রথম নির্দেশই ছিল “ইক্‌রা”—পড়ো। কিন্তু হিজবুত তাহরিরের মতো চরমপন্থী সংগঠনগুলো কৌশল করে ধর্মের নাম ব্যবহার করে অমানবিক ব্যাখ্যা দাঁড় করায়। এভাবে তারা মূলত নারীদের অধিকার খর্ব করে পুরুষতান্ত্রিক দমননীতি চাপিয়ে দিতে চায়।

আজকের পৃথিবীতে শিক্ষা শুধু ব্যক্তিগত উন্নতির চাবিকাঠি নয়, বরং জাতীয় অগ্রগতির মূল স্তম্ভ। বাংলাদেশের প্রতিটি সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকই প্রমাণ করে, মেয়েরা শিক্ষা লাভ করলে পরিবার এগোয়, সমাজ এগোয়, দেশ এগোয়। মেয়েদের শিক্ষাকে সীমাবদ্ধ করার মানে হলো—দেশকে পিছিয়ে দেওয়া, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া।

আমরা দেখেছি, যারা নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে ফতোয়া দেয়, তারাই আসলে মানবতার শত্রু। এরা জানে, শিক্ষিত নারী মানেই সচেতন নারী, আর সচেতন নারী মানেই অন্যায় ও উগ্রতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। তাই তারা ভয় পায়।

এই মুহূর্তে দরকার—সমাজের প্রতিটি স্তরে একযোগে প্রতিবাদ। সরকারকে এ ধরনের উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে পরিবার ও সমাজকে মেয়েদের শিক্ষার প্রতি আরও উৎসাহ ও সমর্থন বাড়াতে হবে।

মেয়েদের শিক্ষা থামানোর ফতোয়া মানে হলো অন্ধকারকে ডাক দেওয়া। আর অন্ধকার কখনো আলোর জয়কে থামাতে পারে না।