Thu. Sep 11th, 2025

বাংলাদেশের মাটিতে আবারও মৌলবাদ মাথা তুলে দাঁড়াতে চাইছে। মুন্সিগঞ্জের কায়ালখালীতে হিজবুত তাওহীদ নামে এক উগ্রপন্থী গোষ্ঠী প্রকাশ্যে ফতোয়া দিয়েছে— মেয়েরা বেশি পড়াশোনা করতে পারবে না! এ কেমন বর্বর ঘোষণা? কারা এদের এই অধিকার দিয়েছে? সংবিধান যেখানে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে, সেখানে কয়েকজন ধর্ম ব্যবসায়ী কীভাবে এমন বেআইনি ও অসাংবিধানিক কথা বলতে সাহস পায়?

এই সাহস আসে আমাদের নীরবতা থেকে। আমরা চুপ থাকি, সহ্য করি, ভয়ে মুখ বন্ধ করি—তাই মৌলবাদীরা সুযোগ নেয়। অথচ এই ফতোয়া শুধু মেয়েদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র নয়, এটি বাংলাদেশের অগ্রগতি রুদ্ধ করার নীলনকশা। কারণ তারা জানে, শিক্ষিত নারী মানেই মুক্ত চিন্তা, প্রশ্ন তোলা, আর মৌলবাদী জালের ছিঁড়ে ফেলা।

আমরা ভুলে গেলে চলবে না, মৌলবাদীরা সমাজের শত্রু। তারা উন্নতির শত্রু। তারা মেয়েদের বন্দি করে রাখতে চায়, যেন নতুন প্রজন্ম অশিক্ষিত, দুর্বল আর নির্ভরশীল হয়ে বেড়ে ওঠে। এক কথায়, তারা চায় বাংলাদেশকে আবার অন্ধকারে ঠেলে দিতে।

এখন সময় এসেছে স্পষ্ট করে বলার— নারীশিক্ষার বিরুদ্ধে কোনো ফতোয়া মানি না, মানব না।

প্রশাসনকে কঠোরভাবে এই গোষ্ঠীকে দমন করতে হবে। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী—সবাইকে প্রতিবাদী কণ্ঠ তুলতে হবে। প্রতিটি স্কুলে, কলেজে, মসজিদে, চায়ের দোকানে এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে: নারীশিক্ষা কারও দয়া নয়, এটি নারীর মৌলিক অধিকার।

আমাদের মেয়েরা ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে, বিজ্ঞানী হবে, লেখক হবে, দেশের প্রধানমন্ত্রী হবে—এটাই বাংলাদেশ। মৌলবাদীরা সেটা চায় না। তাই তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে আজই, এখনই।

মুন্সিগঞ্জের কায়ালখালীর ফতোয়া শুধু স্থানীয় কোনো ঘটনা নয়—এটি পুরো জাতির জন্য এক পরীক্ষা। আমরা যদি আজ চুপ থাকি, কাল হয়তো আমাদের মেয়েদের স্কুলে যাওয়া, কর্মক্ষেত্রে যাওয়া, এমনকি ঘর থেকে বের হওয়াও তারা বন্ধ করতে চাইবে।

তাই স্পষ্ট কথা বলতে হবে—

👉 নারীশিক্ষার বিরুদ্ধে প্রতিটি ফতোয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

👉 মৌলবাদীরা দেশের শত্রু।

👉 তাদের ঠেকাতে হবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে।

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়া দেশ। এখানে মৌলবাদী অন্ধকারের কোনো স্থান নেই। আমাদের মেয়েরা পড়বে, লিখবে, এগিয়ে যাবে—আর মৌলবাদীরা ইতিহাসের আবর্জনার স্তুপে ছিটকে পড়বে।