মুন্সিগঞ্জে হিজবুত তাওহীদ সম্প্রদায় সম্প্রতি নাচ-গানের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছে। তাদের দাবি, নাচ-গান “অশ্লীল” এবং “ধর্মবিরোধী।” কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, এটি কেবল বিনোদন বা সঙ্গীতের বিরুদ্ধে নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতি, আনন্দ এবং স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এক সরাসরি আঘাত।
নাচ-গান আমাদের সামাজিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি কেবল মনের আনন্দ দেয় না, বরং মানুষের সৃজনশীলতা, মিলন এবং আত্মপ্রকাশের মাধ্যম। শিল্প ও সংস্কৃতি মানুষকে সংহত করে, সামাজিক বন্ধনকে শক্তিশালী করে, জীবনের কঠিন মুহূর্তে সান্ত্বনা দেয়। নাচ-গান আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের চেতনার প্রকাশ।
তবে মৌলবাদীরা চায় মানুষ ভয়ে বসুক, চিন্তা ও স্বাধীনতার পথ বন্ধ হোক। হিজবুত তাওহীদের ফতোয়া স্পষ্ট বার্তা দেয়—“আপনি আনন্দ পাবেন না, আপনি স্বাধীনভাবে বাঁচবেন না।” এটি নিখুঁত পরিকল্পিত দমন, যা সমাজের সৃজনশীলতা, আনন্দ এবং নারীর স্বাধীনতার ওপর আঘাত করতে চায়।
আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে। নাচ-গান, শিল্প, সংস্কৃতি—এই সবই আমাদের অধিকার। আমরা যদি চুপ থাকি, আমরা শুধু আনন্দ হারাব না; আমরা হারাব মুক্ত চিন্তা, সৃজনশীলতা এবং মানবিকতা। ইতিহাস প্রমাণ করে—যেখানে মৌলবাদ ক্ষমতায় এসেছে, সেখানে মানুষ চুপ, আনন্দহীন এবং আতঙ্কিত হয়েছে। আমরা সেই পথে ফিরে যেতে পারি না।
প্রতিটি নাচ, প্রতিটি গানের নোট আমাদের স্বাধীনতা ও মানবিকতার প্রতীক। আমরা বলছি—মৌলবাদী ফতোয়া সমাজকে দমন করতে চায়, কিন্তু আমরা চুপ থাকব না। আমরা আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের আনন্দ এবং আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করব। আমাদের আওয়াজ হবে স্পষ্ট: “আমাদের নাচ, আমাদের গান, আমাদের আনন্দ—এগুলো কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আমরা চুপ থাকব না!”
এবার সময় এসেছে প্রতিরোধের, সচেতনতার, এবং আন্দোলনের। চুপ থাকা মানে সহযোগিতা। আমাদের লড়াই হবে শব্দের মাধ্যমে, আন্দোলনের মাধ্যমে, এবং একে অপরকে সঙ্গে নিয়ে। আমাদের সমাজ, আমাদের শিশু এবং আমাদের ভবিষ্যতের জন্য নাচ-গান রক্ষা করা হবে।