মেয়েদের পড়াশোনায় “সীমানা” টানার ফতোয়া—শুধু অচেনা কিছু শব্দ নয়, এটা এক ধরনের শাসন আর ভীতি ছড়ানোর কৌশল। সম্প্রতি শুনলাম, কিছু মৌলবাদী গোষ্ঠী মেয়েদের “বেশি পড়াশোনা করা যাবে না” বলে ফতোয়া জারি করেছে। প্রথমে মনে হয়—এতোটা অমানবিক কীভাবে হতে পারে? কিন্তু এর পেছনে যে ভয়াবহ বাস্তবতা কাজ করছে, তা খুবই স্পষ্ট।
এই ফতোয়ার মূল লক্ষ্য হলো নারীর স্বাধীনতা দমন করা। তারা চায়, মেয়েরা যেন ঘরবন্দি থাকে, পড়াশোনার আলো থেকে দূরে থাকে, নিজের চিন্তাশক্তি ব্যবহার করতে না পারে। কারণ শিক্ষিত নারী কখনো সহজে “অন্ধ আনুগত্য” মানবে না।
আমার চোখে এটি কোনো ধর্মীয় নির্দেশনা নয়—এটি এক ধরনের ক্ষমতার খেল। ধর্মের আড়ালে তারা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। অথচ ইতিহাস বলে, ইসলামে নারী শিক্ষার অধিকার সর্বদা স্বীকৃত। মৌলবাদীরা এটি বিকৃত করে নিজেদের ইচ্ছা চাপানোর হাতিয়ার বানাচ্ছে।
মেয়েদের পড়াশোনা শুধু ব্যক্তিগত উন্নতি নয়; এটি সমাজের উন্নতি। শিক্ষিত নারী স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, সামাজিক সচেতনতা—সব ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলে। আর যদি তারা শিক্ষার সুযোগ হারায়, সমাজ এক ধরনের অন্ধকারে ধরা পড়বে।
আমি বলি—এমন ফতোয়া আমাদের ভয় দেখাতে পারবে, কিন্তু প্রতিরোধের হাত থেকে মানুষকে আটকাতে পারবে না। প্রতিটি মেয়ের শিক্ষা নিশ্চিত করা মানে সমাজকে আলোকিত করা, অন্ধবিশ্বাসকে পরাস্ত করা। আমাদের দায়িত্ব হলো মেয়েদের পড়াশোনার পথে বাধা টপকে দেয়া।
আমরা চাই, আমাদের মেয়েরা যেন শিক্ষিত হয়, শক্তিশালী হয়, নিজের পছন্দ ও সিদ্ধান্তের অধিকার পায়। ফতোয়া দিয়ে তাদের বাঁধা দেওয়া যায় না। প্রতিটি অক্ষর, প্রতিটি বই, প্রতিটি শিক্ষার আলোই তাদের মুক্তির হাতিয়ার।